ভালো ল্যাপটপ চেনার উপায় ও কেনার আগে করণীয়

ভালো ল্যাপটপ চেনার উপায়

ল্যাপটপ আমাদের নিত্যদিনের ব্যবহারের একটা বস্তু। একটা সময় ডেস্কটপের জয়জয়কার থাকলে ও এখন মানুষ উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ল্যাপটপই বেশী পছন্দ করে। কারন এটার অনেক অনেক গুলো সুবিধা রয়েছে যা ডেস্কটপে পাওয়া কোন ভাবেই সম্ভব না। তবে আজকে আমরা ল্যাপটপের সুবিধা নিয়ে কথা বলবো না, আমরা কথা বলবো, ল্যাপটপ কিনতে চাইলে আপনাকে কি করা উচিত বা ভালো ল্যাপটপ চেনার উপায় কি?

 

আজকের এই ব্লগ পোস্ট শেষ পর্যন্ত পড়লে আশা করি আপনি বুঝতে পারবেন যে, কোন ল্যাপটপটি আপনার জন্য একদম পারফেক্ট। ভালো ল্যাপটপের বৈশিষ্ট্য গুলো এখানে আমরা উল্লেখ করবো এবং আশা করি এটা আপনাদের যথেষ্ট সাহায্য করবে তো ল্যাপটপ কেনার আগে জেনে নিন এই ফ্যাক্টর গুলো।

 

ল্যাপটপ কেনার আগে যে ৮ টি বিষয়ে জেনে নিতে হবে

 

ল্যাপটপ কেনার আগে যদি আপনি এই ৮ টি বিষয়ে ভালোভাবে বুঝে নেন, তাহলে আপনাকে ডিসিশন নিতে খুব বেশী বেগ পেতে হবে না এবং আপনি অনেক সহজেই একটা ভালো কোয়ালিটির ল্যাপটপ বাছাই করে নিতে পারবেন আপনার নিজের জন্য। তাহলে আসুন জেনে নেওয়া যাকঃ

 

১. আপনার দরকারি কনফিগারেশন এবং স্পেসিফিকেশন নোট করুন

 

একেক ধরনের কাজের জন্য একেক ধরনের স্পেকস এবং কনফিগারেশন থাকে। সাপোজ, আপনি বাসায় পার্সোনালি ইউজ করবেন শুধু মাত্র কিছু ডকুমেন্টস নিয়ে কাজ করবেন, লেখা-লেখি, প্রিন্টিং এসব। তখন আপনার খুব বেশী হাই-কনফিগারড ল্যাপটপ লাগবে না।

 

কিন্তু আপনিই যদি গেম খেলতে যান কিংবা ভিডিও ইডিটিং করতে যান, তাহলে আপনাকে একটু ভালো কনফিগারেশনওয়ালা ল্যাপটপ কিনতে হবে। তো, শুরুতেই আপনার প্রয়োজন অনুসারে স্পেকস গুলো একটু নোট করে নিতে হবে।

 

আপনার দরকার ৪ জিবি র্যাম, সেখানে ১৬ জিবি নিয়ে টাকা নষ্ট করার কোনই দরকার নাই। আবার আপনার দরকার ১৬ জিবি র্যাম কিংবা আপনি নিলেন ৪ জিবি, সেটা আপনার ল্যাপটপের লাইফটাইম কমিয়ে দিবে। এই জন্য সব গুলো পার্টস এর স্পেকস ভালো করে এনালাইজ করে নেওয়া উচিত।

 

২. আপনার সঠিক সাইজ বাছাই করুন

 

ল্যাপটপের বিভিন্ন সাইজ রয়েছে। সাধারন ১৪ ইঞ্চি ল্যাপটপ গুলো ছোট, ১৫ ইঞ্চি গুলো মিডিয়াম এবং ১৭ ইঞ্চি গুলো লার্জ ধরা হয়ে থাকে। আপনাকে এই ৩ টা ক্যাটাগরি থেকে যেকোন একটা বেছে নিতে হবে আপনার প্রয়োজন অনুসারে।

 

আপনি যদি ভিডিও ইডিটিং করেন, তাহলে হয়তো আপনার একটু বড় স্ক্রিনের প্রয়োজন হবে। দেখা গেছে, সাইজের সাথে দাম অনেক উঠানামা করে। তাই খুব বেশী প্রয়োজন না হলে বেশী বড় সাইজের ল্যাপটপ ইউজ না করাটাই বেটার।

 

ছোট সাইজের ল্যাপটপ হলে সেটা অনেক পোর্টেবল হয়, আপনি খুব সহজেই সেটাকে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সড়াতে পারেন। এবং আপনাকে যদি ল্যাপটপ ক্যারি করতে হয় এখান থেকে ওখানে, তাহলে ১৪ ইঞ্চি ল্যাপটপের কোনই বিকল্প নেই।

 

৩. কিবোর্ড এবং টাচপ্যাড পরীক্ষা করুন

 

অনেকে একটা ভুল করে থাকেন, তারা ভাবেন ল্যাপটপের কিবোর্ড বা টাচপ্যাড ভালো না হলে ও সমস্যা নাই, কারন কাজের জন্য এক্সটার্নাল ইউজ করতে হবে। কিন্তু এটা আসলে মোটে ও সত্যি নাহ। আমি ব্যক্তিগত ভাবে এমন কিছু সিচুয়েশনে ল্যাপটপ নিয়ে কাজে বসেছি, যেখানে কোন ভাবেই এক্সটার্নাল কিবোর্ড বা মাউজ ইউজ করার সুযোগ নেই।

 

অতএব, এই দুইটা পার্ট খুবই জরুরি। আপনি যে মডেলের ল্যাপটপ কিনতে যাচ্ছেন, সেটার টাচপ্যাডের পারফর্মেন্স কি সেটা আপনি নিজে ও পরীক্ষা করবেন এবং অনলাইনে কিছু রিভিউ ও দেখে নিতে পারেন। অনলাইনে রিভিউ দেখলে আপনার মধ্যে অনেক ভালো একটা ধারনা চলে আসবে সেটা নিয়ে।

 

৪. ডিসপ্লে কোয়ালিটি

 

ডিসপ্লে কোয়ালিটি একটা অনেক বড় ইস্যু, যখন আমরা ল্যাপটপ নিয়ে কথা বলছি। নানা ধরনের ডিসপ্লে টাইপ এবং সাইজওয়ালা ল্যাপটপ এখন বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। আপনার প্রয়োজন অনুসারে আপনাকে ডিসিশন নিতে হবে কোন সাইজের ডিসপ্লে আপনার জন্য উপযুক্ত।

 

অবশ্যই Full HD or 1920-by-1080p এই রেজুলেশনের ডিসপ্লে থাকতে হবে। এটা হচ্ছে মিনিমাম রিকুয়ারমেন্ট, এর চেয়ে বেটার যদি পাওয়া যায় তাহলে আরো বেশী ভালো।

 

ল্যাপটপের ডিসপ্লের ৩ টা টাইপ আছে, সেগুলো হচ্ছেঃ Twisted Nematic (TN), In-Plane Switching (IPS), and Organic Light-emitting Diode (OLED)।

 

এই ৩ টা টাইপেরই নিজস্ব সুবিধা এবং অসুবিধা রয়েছে। ল্যাপটপ কেনার আগে আপনাকে ডিসাইড করতে হবে কোন টাইপের স্ক্রিন আপনার প্রয়োজন, সে অনুযায়ী আপনাকে ডিসিশন নিতে হবে।

 

আরও পড়ুন – ল্যাপটপ ঠান্ডা রাখার কার্যকরী ৭টি উপায়

 

৫. ব্যাটারি লাইফ/ব্যাকআপ

 

যদি ও ল্যাপটপ সব সময় বিদ্যুৎ সংযুক্ত হওয়ার ব্যবহার করাই শ্রেয়, তবু ও ব্যাটারি লাইফ অনেক বড় একটা ইস্যু। কারন দেখা গেলো, আপনার জরুরি একটা কাজের সময় বিদ্যুৎ চলে গেলো কিন্তু আপনাকে কাজটা শেষ করেই উঠতে হবে। এক্ষেত্রে আপনার ল্যাপটপে যদি ব্যাটারি ব্যাকাপ ভালো থাকে, তাহলে আপনি খুব সহজেই কাজটা সম্পন্ন করে ফেলতে পারবেন।

 

তো অবশ্যই, ব্যাটারির লাইফ, ক্যাপাসিটি, ব্যাকআপ এই বিষয়গুলো ক্লিয়ার হয়ে নিবেন ভালো করে। তাহলে খুব সহজেই আপনি সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন আপনার কি ল্যাপটপ দরকার।

 

৭. ব্র্যান্ড

 

ল্যাপটপের ক্ষেত্রে ব্র্যান্ড অনেক বড় একটা ব্যাপার। আমি মনে করি পরিচিত এবং নামীদামী কোন ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ কেনাই ভাল। দেখা যাবে হয়তো অন্য কোন অখ্যাত ব্র্যান্ড আপনাকে অনেক কম দামে অনেক হাই কনফিগারেশন অফার করতে পারে, আমি মনে করি ওসব এভয়েড করাটাই শ্রেয়।

 

৮. বাজেট

 

পরিশেষে হচ্ছে বাজেট, কারন সব কিছুর মুলে রয়েছে আপনার ঠিক কত টাকা স্পেন্ডিং করার ইচ্ছা রয়েছে একটা ল্যাপটপ কিনতে। আপনার বাজেট অনুযায়ী আপনার পছন্দের ল্যাপটপ মিলবে কি না সেটা ও একটা ইস্যু। সেজন্য আপনাকে কেনার আগে অবশ্যই আপনার বাজেটের সাথে সামঞ্জস্যপুর্ন ল্যাপটপ গুলো অনলাইনে চেক করে বাছাই করে রাখতে হবে।

 

উপরোক্ত ৭ টি ফ্যাক্টর এনাইলাইজ করলেই আপনি আপনার জন্য একদম আদর্শ একটা ল্যাপটপ পেয়ে যাবেন, যা আপনি খুব ভালো ভাবেই আপনার কাজে ব্যবহার করতে পারবেন। আশা করছি আমাদের এই গাইড আপনাকে ল্যাপটপ পছন্দ করতে সাহায্য করবে।

 

আরও পড়ুন – হার্ডডিস্ক ডাটা রিকভারি কি? কীভাবে এবং কোথায় করবেন?

Share With

You may also like

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Most Popular Post

Have You Lost Data!

We have ability of recuperating your data from all kind of digital storage devices

Scroll to Top