মেমোরি কার্ড চিনি না এমন কেউ হয়ত নেই, আমরা সবাইই মেমোরি কার্ড চিনি। এটা হচ্ছে সেমিকন্ডাক্টরভিত্তিক এক ধরনের প্রযুক্তিপন্য যা তার চিপের মধ্যে আমাদের প্রয়োজনীয় ফাইল যেমন, অডিও, ভিডিও, টেক্সটস, ডকস এসব ধরে রাখে। এর ব্যবহার অনেক বহুল, যেমন এটা মোবাইল থেকে শুরু করে এখন টিভি, কম্পিউটার, ক্যামেরা সহ সব ধরনের মিডিয়া প্লেয়ারে ইউজ করা হয়ে থাকে।
এটা আকারে অনেক ছোট থাকলে ও এতে ডাটা সংরক্ষণ করা যায় অনেক বেশী। তো আজকে আমাদের এই ব্লগ পোস্টে আসলে আমরা জানবো মেমোরি কার্ড কীভাবে ভালো রাখতে হবে। এমন কিছু টিপস আপনাদের সাথে শেয়ার করবো, যার মাধ্যমে আপনি আপনার মেমোরি কার্ডকে সুরক্ষিত রাখতে সক্ষম হবেন।
মেমোরি কার্ড ভালো রাখার ৬ টি উপায়
এখানে আমরা ৬ টি টিপস শেয়ার করছি আপনাদের জন্য, এবং আশা করছি এই ৬ টি টিপস ভালো ভাবে অনুসরন করলে আপনারা আপনাদের মেমোরি কার্ড রিলেটেড সকল জটিলতা থেকে মুক্তি পেতে পারবেন।
১. সেফলি ইনসার্ট এবং ইজেক্ট করুন
চালু থাকা ক্যামেরা বা ফোনে মেমোরি কার্ড ইনসার্ট না করাটাই বেটার। সব সময় চেষ্টা করবেন ফোন বা ক্যামেরা অফ করার পরে সেখানে মেমোরি কার্ড ইনসার্ট করতে।
একই নিয়ম হচ্ছে ইজেক্টের ক্ষেত্রে ও। প্রোপারলি ফোন বা ক্যামেরা বন্ধ করে, তারপরে ইজেক্ট করুন। পিসি থেকে মেমোরি খোলার পুর্বে সেফ ইজেক্ট বা সেফ রিমুভাল নামের যে অপশন আছে, সেটা ব্যবহার করুন। অনেকে মনে করেন এসব ইউজলেস প্রোগ্রাম, কিন্তু নাহ, মোটে ও না।
কারন আপনি যখন সেফ রিমুভ দিয়ে মেমোরি খুলেন, এর মানে হচ্ছে মেমোরি খোলার আগেই সেটা আপনার পিসি থেকে ডিসকানেক্টেড হয়ে গেছে আর কাজ করছে না, এখন এটা খুলে ফেলাটা সেফ। কিন্তু সেফ রিমুভ না দিয়ে খুললে আপনি আপনার মেমোরি কাজ করা অবস্থায় খুলে ফেললেন, এটা মোটে ও ভালো প্র্যাকটিস নাহ।
২. মেমোরি সম্পুর্ন ফুল করবেন নাহ
সাপোজ আপনার মেমোরি কার্ড ৮ জিবি, এখন আপনি যদি ৮ জিবিই ফুল করে সেটা ইউজ করতে থাকেন, তাহলে ওটার ডাটা রীড এবং রাইট করতে যথেষ্ট সমস্যা হবে।
এজন্য সব সময় চেষ্টা করতে হবে মেমোরির মিনিমাম ১০-১৫% স্পেস ফাকা রাখতে। যদি এর বেশী ফাকা রাখা যায়, তাহলে আরো ভালো।
৩. অরিজিনাল ব্র্যান্ডের মেমোরি কিনতে হবে
আমরা কম দামে মেমোরি কিনতে গিয়ে অনেক সময় বাজে কোয়ালিটির মেমোরি কিনে ফেলি। মেমোরি নষ্ট হওয়ার অন্যতম একটা বড় কারন হচ্ছে এই লো-কোয়ালিটি মেমোরি ইউজ করা। সো আমাদের সব সময় ভালো কোয়ালিটির এবং ব্র্যান্ডেড মেমোরি কার্ড ইউজ করতে হবে।
অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন, ভালো কোয়ালিটির মেমোরি কার্ড কোথায় পাবো? এটার সবচেয়ে সহজ সমাধান হচ্ছে ব্র্যান্ডে দোকান থেকে মেমোরি কার্ড কেনা। সাপোজ আপনি যদি স্যামসাং ইউজার হয়ে থাকেন, স্যামসাং এর শো রুমে আপনি তাদের অরিজিনাল মেমোরি কার্ড পেয়ে যাবেন।
৪. হাই কোয়ালিটি কার্ড রিডার ইউজ করতে হবে
কার্ড রিডার ইউজ করি আমরা ডাটা ট্রান্সফারের জন্য, কিন্তু সেটার কোয়ালিটি যদি খারাপ হয়ে থাকে তাহলে ডাটা রীড এন্ড রাইট করতে যথেষ্ট সমস্যা হয়ে থাকে কিংবা স্লো হয়ে থাকে।
এক্ষেত্রে আপনার মেমোরি কার্ড যত ভালো কোয়ালিটিরই হোক না কেন, কার্ড রিডারের কারনে আপনি ভালো আউটপুট পাবেন না। আবার এটা আপনার মেমোরিকে নষ্ট ও করতে ফেলতে পারে।
৫. ক্যামেরায় ব্যবহারের পুর্বে ফরম্যাট করে নিন
অনেকেই আমরা ক্যামেরাতে মেমোরি কার্ড ইউজ করি। তো ক্যামেরায় মেমোরি কার্ড ব্যবহারের কিছু শর্ত আছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো, প্রতিবার ব্যবহারের পুর্বে সেটাকে ফরম্যাট করে নিতে হবে। এতে করে মেমোরি কার্ড ভালো ভাবে কাজ করতে সক্ষম হবে।
আর চলতি ক্যামেরায় কখনোই মেমোরি খোলা বা লাগানো যাবে না। সব সময় চেষ্টা করতে হবে হাই স্পীডে ডাটা রীড/রাইট করতে পারে, এমন মেমোরি কার্ড ইউজ করার।
ক্যামেরায় লাগানো অবস্থায় মেমোরি কার্ড থেকে ফটো/ভিডিও ডিলেট না করাই শ্রেয়, ওইটা পরবর্তীতে আপনার ল্যাপটপে ও করতে পারবেন।
৬. ব্যাকাপ মেমোরি কার্ড রাখুন
সব সময় চেষ্টা করবেন, আপনার ফাইল গুলোর জন্য একটা ব্যাকাপ রাখতে। এতে করে আপনি কখনো অনাকাঙ্ক্ষিত ফাইল লসের শিকার হলে যেন আপনার গুরুত্বপুর্ন ফাইল গুলো আপনার কাছে জমা থাকে।
মেমোরি কার্ড রিকভারি কিভাবে করবো?
কিন্তু এত কিছুর পরে ও, আমরা প্রায়ই আমাদের মুল্যবান ডাটা হারিয়ে ফেলি মেমোরি কার্ড থেকে। তো এখন প্রশ্ন হচ্ছে মেমোরি থেকে কিছু অনিচ্ছায় ডিলেট হয়ে গেলে বা ক্র্যাশড হলে সেটা কি ফিরিয়ে আনা সম্ভব?
উত্তরঃ হ্যাঁ, অবশ্যই ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কীভাবে সম্ভব?
শুরুতেই বলে নেওয়া ভালো, ডাটা রিকভার করা খুবই জটিল একটা প্রসেস। আপনারা অনেক ইউটিউব ভিডিও কিংবা ব্লগ পোস্টে হয়তো দেখে থাকবেন যে বিভিন্ন সফটওয়ার ইউজ করে মিসিং ডাটা বের করা যায়।
আপনি হয়তো অনেক সফটওয়ারের নাম ও দেখেছেন।
কিন্তু, বেশীরভাগ ক্ষেত্রে এসব সফটওয়ার আপনার ডাটা ফিরিয়ে দেওয়া দুরের কথা, ডাটাকে স্থায়ী ভাবে হারিয়ে ফেলার বন্দোবস্ত করে দেয়।
সেজন্য, আপনার উচিত হবে এসব থার্ড পার্টি কোন সফটওয়ার ইউজ না করে, সরাসরি ডাটা রিকভারি কোন এক্সপার্টের সাথে আলোচনা করা। এবং এই বিষয়ে তাদের সাজেশন নেওয়া।
প্রয়োজন অনুসারে, দক্ষ ডাটা রিকভারি এক্সপার্ট দিয়ে আপনার ডাটা রিকভার করিয়ে নেওয়া।
কিন্তু এক্ষেত্রে আপনার ডাটা খুবই জরুরি এবং প্রাইভেট হতে পারে, তাই স্বনামধন্য এবং ট্রাস্টেড কোন প্রতিষ্ঠানকেই এই কাজের জন্য বাছাই করা উচিত বলে আমি মনে করি।
উপসংহার
মেমোরি কার্ড সমস্যার সমাধান নিয়ে আপনাদের সাথে এই ব্লগ পোস্টে আলোচনা করলাম, আশা করি আপনারা আপনাদের মেমোরি কার্ড রিলেটেড যত জটিলতা আছে, সেসবের উত্তর পেয়ে গেছেন। আর হ্যাঁ, মেমোরি কার্ড রিকভারির জন্য আপনার চাইলে আমাদের ডাটা রিকভারি স্টেশনের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
আমরা যত্ন সহকারে আপনার মুল্যবান ডাটা রিকভার করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।